শবে বরাতের ফজিলত ও ইবাদত: মহান আল্লাহর রহমতের রজনী

শবে বরাতের ফজিলত ও ইবাদত: মহান আল্লাহর রহমতের রজনী

পবিত্র শবে বরাত, যা শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত, মুসলিম বিশ্বে এক বিশেষ রাত হিসেবে পরিচিত। এটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার রাত, যেখানে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ দয়া প্রদর্শন করেন। কোরআন ও সহিহ হাদিসে এ রাতের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে।

ক্ষমা ও রহমতের রজনী:

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক-বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” (সহিহ ইবনে হিব্বান)

এ রাতটি বিশেষভাবে ক্ষমা প্রার্থনা ও আল্লাহর কাছে দয়া লাভের সময়। হজরত আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ রাতে দীর্ঘ সিজদা করেছেন এবং তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ রাতের বিশেষত্ব হলো আল্লাহ বান্দাদের প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি দেন।

শবে বরাতে ইবাদত ও রোজা:

শবে বরাতে রাতে ইবাদত করা এবং পরদিন রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “১৪ শাবানের রাতে রাতভর ইবাদত করো এবং দিনের বেলা রোজা রাখো, কারণ আল্লাহ তায়ালা এ রাতে মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে ডাকেন।” (সুনানে ইবনে মাজাহ)

এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের ক্ষমা, রিজিক ও রোগমুক্তির দান করেন, তাই এই রাতে বিশেষ দোয়া ও ইবাদত করার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও বরকত লাভের আশা করতে পারেন।

বছরব্যাপী ভাগ্যনির্ধারণের রজনী:

শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তায়ালা বছরের সকল ফয়সালা, যেমন কারা জীবিত থাকবে, কারা মারা যাবে, তাদের রিজিক কত হবে—এ সব নির্ধারণ করেন। এ রাতটি বিশেষভাবে মানুষের ভাগ্যনির্ধারণের রজনী হিসেবে বিবেচিত।

ইবাদত ও দোয়া:

এ রাতটি তসবিহ-তাহলিল, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, কোরআন তেলাওয়াত এবং নফল নামাজ পড়ার জন্য বিশেষ উপযুক্ত। কবর জিয়ারত এবং দান-খয়রাতও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। মুমিন মুসলিমদের জন্য এ রাতটি আল্লাহর কাছ থেকে মাগফিরাত ও রহমত লাভের এক দারুণ সুযোগ।

সর্বশেষ:

শবে বরাতের রাতটি মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র ও বরকতময় রাত, যেখানে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের সুযোগ রয়েছে। সকল মুসলিম উম্মাহকে এ রাতের ইবাদত ও দোয়া গ্রহণের তাওফিক দান করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত।

CATEGORIES
TAGS
Share This