
প্রবাসী বাংলাদেশিদের তিনটি বন্ডে মুনাফার হার বাড়ানো হয়েছে
সঞ্চয়পত্রের পর এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সঞ্চয় বন্ডের মুনাফার হারও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই পরিবর্তন প্রভাবিত করবে তিন ধরনের বন্ড, যেগুলি হলো: ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, এবং ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতাধীন এসব বন্ডের মুনাফার হার বৃদ্ধির প্রস্তাব সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে। অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে আইআরডি এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
আইআরডি সচিব মো. আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, “আমাদের মনে হয়েছে, এই তিন ধরনের বন্ডের মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন।” তবে তিনি মুনাফা কতটা বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। উল্লেখযোগ্য যে, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের মেয়াদ শেষে সবচেয়ে বেশি ১২ শতাংশ মুনাফা রয়েছে, যা পাঁচ বছরের মেয়াদি। অন্যদিকে, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের মুনাফার হার যথাক্রমে সাড়ে ৬ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ শতাংশ, এবং এগুলোর মেয়াদ ৩ বছর।
এছাড়া, বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সরকারের নতুন কিছু সুবিধা চালু করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে এক মেয়াদে বিনিয়োগ এবং দুই মেয়াদে পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে, আর ইউএস ডলার প্রিমিয়াম ও ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে এক মেয়াদে বিনিয়োগ এবং চার মেয়াদে পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাবিক, পাইলট এবং কেবিন ক্রুদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ পুনরায় চালু করা হয়েছে। নতুন সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা হয়নি, অর্থাৎ এখন থেকে এসব ব্যক্তিরা যত খুশি তত টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বন্ড কেনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, এক্সচেঞ্জ হাউস, এক্সচেঞ্জ কোম্পানি এবং তফসিলি ব্যাংকের এডি শাখাগুলোতে যাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, এসব বন্ডে বিনিয়োগ করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবের বাধ্যবাধকতা নেই, এবং ওয়েজ আর্নাররা তাঁদের মনোনীত ব্যক্তির নামে এ বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
এর পাশাপাশি, গত ১ জানুয়ারি থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এবং অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন মুনাফার হার ১২.২৫% থেকে ১২.৫৫% পর্যন্ত হয়েছে, এবং সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে।
সরকারের এসব নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র ও বন্ড বিক্রি করে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূরণের দিকে যাচ্ছে।