
মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর আজ: পুণ্যময় রাতের ইবাদত ও রহমত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মহিমান্বিত ও তাৎপর্যময় একটি রাত। প্রতি বছর রমজান মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতটিতে এই পবিত্র রাতটি পালন করা হয়। এই রাতে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছিল, যা মুসলিম বিশ্বে অশেষ গুরুত্ব বহন করে। আল্লাহ তায়ালা তার কালাম কুরআনকে এই রাতে নাজিল করার মাধ্যমে মানবজাতিকে বিশেষ এক নেয়ামত প্রদান করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা তার কুরআনে বলেন, “নিশ্চয় আমি কুরআনকে নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। লাইলাতুল কদর সম্বন্ধে তুমি কী জানো? লাইলাতুল কদর এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।” (সুরা কদর: ১-৩)। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দেন যে, লাইলাতুল কদর পৃথিবীর সব রাতের মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় এবং এতে ইবাদত ও দোয়া গ্রহণের বিশেষ সুবিধা রয়েছে।
উম্মতে মুহাম্মদির জন্য লাইলাতুল কদর একটি বিশেষ নেয়ামত। অন্যান্য জাতির তুলনায় আমাদের গড় আয়ু কম হওয়ায় আল্লাহ আমাদের জন্য এই রাতটি উপহার দিয়েছেন। এই রাতের ইবাদতের মাধ্যমে এক হাজার মাসের সমান সাওয়াব অর্জন করা সম্ভব।
এ রাতে আল্লাহ তায়ালা লাওহে মাহফুজে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, এবং ফেরেশতারা রহমত, বরকত ও কল্যাণ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। কুরআনে বলা হয়েছে, “এ রাতে ফেরেশতাগণ ও জিবরাইল (আ.) অবতরণ করেন, প্রত্যেক কাজের জন্য তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় এই রাত ফজরের উদয় পর্যন্ত।” (সুরা কদর: ৪-৫)

হাদিসে বলা হয়েছে, রমজানের শেষ দশকের বেজোড় (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ রমজান) রাতগুলোর যেকোনো একটি রাত লাইলাতুল কদর হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ২৭ রমজান (২৬ রমজান দিবাগত রাত) লাইলাতুল কদর হওয়ার। এ কারণে মুসলমানরা এই বিশেষ রাতে ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত ও আত্মপরিচয় পরিশুদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেন।
সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, তারা যেন এই মহিমান্বিত রাতে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের জন্য অধিকতর ইবাদত করেন এবং তাদের জীবনের সকল ভুলত্রুটি ও গুনাহ থেকে তাওবা করে, এক নতুন পথে চলার সংকল্প গ্রহণ করেন।
আল্লাহ তায়ালা সকলকে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতের কল্যাণ ও রহমত প্রদান করুন।