পঞ্চগড়ে দুদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশা ঝরছে বৃষ্টির মতো

পঞ্চগড়ে দুদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশা ঝরছে বৃষ্টির মতো

পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা আবারও বৃদ্ধি পেয়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত দুইদিন ধরে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ এবং কুয়াশার প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন, শুক্রবার, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া দফতরের সূত্রে জানা গেছে, তাপমাত্রা যখন ১০ ডিগ্রির নিচে চলে যায়, তখন শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বর্তমানে, উত্তরের হিমশীতল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা অনেক বেড়ে গেছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায়, এবং বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষ করে সকালে ও সন্ধ্যায় এক ধরনের অস্বস্তি অনুভব করছেন। সূর্য উঠলেও তার তীব্রতা একেবারেই কম, ফলে দিনের বেলা শীতের অবস্থা তেমন প্রশমিত হচ্ছে না।

বিশেষত, কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা এই তীব্র শীতের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একজন স্থানীয় কৃষক জানান, গত দুইদিন ধরে কুয়াশা এবং ঠান্ডা বাতাসের কারণে শাকসবজি সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “এই কুয়াশার কারণে ১০ হাত দূরেও কিছু দেখা যায় না, ফলে কাজ করতে গিয়ে প্রায় সময় বিপদে পড়ছি। শাকসবজি সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক সময় বুঝতে পারি না কোথায় কী আছে।”

এছাড়া, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সাথে সাথে শীতজনিত রোগের সংখ্যাও বাড়ছে। শিশুসন্তান এবং বৃদ্ধদের মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত অসুস্থতা বেড়েছে, যা পরিবারগুলোর জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতের কারণে জনজীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায়, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ নানা সতর্কতা জারি করেছে এবং শীতবস্ত্র বিতরণের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় জানান, শৈত্যপ্রবাহের এই পরিস্থিতি আরও দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হতে পারে এবং জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের দিকে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ততদিন পর্যন্ত স্থানীয়দের শীতের কবলে পড়তে হতে পারে, তাই গরম পোশাক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া, শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এবং কৃষি কাজের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে কৃষকদের বিশেষভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তীব্র শীতের এই পরিস্থিতি, বিশেষ করে কৃষি উৎপাদন ও শ্রমিকদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

CATEGORIES
TAGS
Share This