
ঈদে সুস্থ থাকতে যেভাবে খাবেন মাংস
বিত্র ঈদুল আজহা সামনে, আর এই ঈদে মাংস খাওয়ার ধুম লেগে যায় প্রায় সব ঘরেই। নানা পদে রান্না হয় গরু ও খাসির মাংস। তবে অনেকেই ভাবেন—ওজনাধিক্য, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যায় ভুগলে গরুর মাংস খাওয়া একেবারে নিষেধ। কিন্তু বাস্তবে সঠিক নিয়ম মেনে এবং পরিমাণ বুঝে খেলে মাংস খাওয়া ক্ষতিকর নয় বরং উপকারীও হতে পারে।
গরুর মাংস: উপকারী যত উপাদান
গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না করা মাংসে প্রায় ২৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, যা শরীরের দৈনিক চাহিদার প্রায় অর্ধেক পূরণ করে। এতে থাকে কারনিটিন ও কারনোসিন—দুটি বিশেষ অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরের শক্তি উৎপাদন বাড়াতে এবং ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া গরুর মাংস গ্লুটাথিয়নের ভালো উৎস, যাকে বলা হয় “মাস্টার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট”। এটি হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
গরুর মাংস খনিজ উপাদানেও ভরপুর। এতে রয়েছে:
- জিংক: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- সেলেনিয়াম: ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে
- হেম আয়রন: রক্তশূন্যতা রোধে কার্যকর
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: শরীরের কোষগুলোকে শক্তি জোগায়
যেভাবে খাবেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে
গরুর মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা খারাপ চর্বি বেশি থাকলেও, রান্নার আগে দৃশ্যমান চর্বি ফেলে দিলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
- একজন সুস্থ ব্যক্তি মাসে ৭-৮ দিন মাংস খেতে পারেন
- যাদের হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে, তাদের মাসে ৩-৪ দিনই যথেষ্ট
- প্রতিদিনের পরিমাণ যেন ৮৫-৯০ গ্রাম না ছাড়ায়
ঈদে মাংস খেতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বরং স্বাস্থ্যকরভাবে রান্না করে ও পরিমাণ মেনে খেলে গরুর মাংসও হতে পারে পুষ্টির দারুণ উৎস। মনে রাখবেন, খাবার নয়, বরং আমাদের খাওয়ার অভ্যাসই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বা খারাপ হয়।