গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদন

গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদন

দীর্ঘ ১৫ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর ফিলিস্তিনের গাজায় অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। আজ শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা এই চুক্তি অনুমোদন করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, চুক্তি অনুমোদিত হলে এটি কার্যকর করা শুরু হবে এবং এর ফলে গাজার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, চুক্তি বাস্তবায়ন ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের ঐকমত্যের বিষয়ে গত বুধবার মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার তথ্য প্রকাশ করে। শুক্রবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ইসরায়েলের সরকারের অনুমোদনের পর চুক্তি অনুযায়ী জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি তিনটি ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের জন্য গাজায় অস্ত্রবিরতি কার্যকর থাকবে। এ সময় হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল ১৯ বছরের কম বয়সী নারী ও শিশু বন্দীদের মুক্তি দেবে। একই সঙ্গে গাজার একটি নির্দিষ্ট অংশ থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়া হবে।

দ্বিতীয় ধাপে হামাস ইসরায়েলের বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে এবং এর বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের আরও একটি দলকে মুক্তি দেওয়া হবে। এ সময় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী পুরোপুরি গাজা ত্যাগ করবে। তৃতীয় ধাপে হামাস ইসরায়েলি মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেবে এবং গাজা পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু হবে।

যদিও চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে, ইসরায়েলের সরকারে এটি নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। কট্টরপন্থী মন্ত্রীরা যেমন জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মরিচ এই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১,২০০ জনের বেশি নিহত হন এবং আড়াই শ’রও বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলে এটি গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা হ্রাসে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

CATEGORIES
Share This