ঢাকার বাতাস বর্তমানে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, এবং দূষণের ক্ষেত্রে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে

ঢাকার বাতাস বর্তমানে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, এবং দূষণের ক্ষেত্রে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে

ঢাকার বাতাস বর্তমানে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে, এবং এটি বিশ্বব্যাপী এক বিস্ময়কর পরিসংখ্যান তৈরি করেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে, ঢাকা বাতাসের মানের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় অস্বাস্থ্যকর শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই অবস্থা পরিবেশগত সংকটের নতুন দিক উন্মোচন করছে, এবং এর ফলে শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বিশ্বব্যাপী পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা “এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স” (AQI) এর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকা শহরের বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণার পরিমাণ ও অন্যান্য দূষণকারী পদার্থের উপস্থিতি অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, ঢাকার বাতাসে থাকা ক্ষতিকর উপাদান যেমন PM2.5 (দ্যূতিযুক্ত ক্ষুদ্র কণিকা) এর মাত্রা সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক সীমার চেয়ে অনেক বেশি। ঢাকার পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন যে, এ অবস্থা চলতে থাকলে এটি শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, এবং ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে।

বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সাথে তুলনা করলে, ঢাকার বাতাসের গুণগত মান অনেকটাই খারাপ। শুধু ঢাকাই নয়, দেশের অন্যান্য শহরগুলোরও বাতাসের মান উদ্বেগজনকভাবে খারাপ হয়ে পড়েছে। বিশেষত, শীতকালে শুষ্ক বাতাস ও কৃষি জমি থেকে উড়ে আসা ধূলিকণা এবং যানবাহন, শিল্পকারখানা থেকে নির্গত বায়ু দূষণ একত্রিত হয়ে শহরের বাতাসকে আরো দূষিত করে তুলছে।

এটি শুধু পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হাঁপানি, এলার্জি, শিশুদের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা, এবং বৃদ্ধদের জন্য নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই অবস্থায় বসবাসকারী মানুষদের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে হলে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশ্বব্যাপী অনেক উন্নত দেশ ইতোমধ্যেই তাদের শহরের বাতাসের গুণগত মানের উন্নতি সাধনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, কিন্তু ঢাকার ক্ষেত্রে এই সমস্যার সমাধান কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশবিদরা মনে করছেন, দ্রুত কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

এই সংকট মোকাবেলা করতে হলে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি, শিল্প-কারখানার দূষণ কমানো, এবং বনভূমির সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। সরকারের পাশাপাশি, নাগরিক সমাজেরও ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

CATEGORIES
TAGS
Share This