
অভিনয় ও রাজনীতিকে বিদায় জানালেন সোহেল রানা
ঢালিউডের একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রখ্যাত প্রযোজক-পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনয় ও রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
১৯৭৩ সালে ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্র প্রযোজনার মাধ্যমে যার পথচলা শুরু, সেই সোহেল রানা পরে নায়ক ও পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ‘মাসুদ রানা’ সিনেমার মাধ্যমে। টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ঢালিউডের চলচ্চিত্রে অবদান রেখে তিনি হয়ে উঠেছেন এক অনন্য নাম।
অভিনয় জীবনের পাশাপাশি সোহেল রানা রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। দীর্ঘদিন বিরতির পর গেল বছর তার নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল—‘বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি (বিআইপি)’, যার লোগোতে ছিল শান্তির প্রতীক পায়রা। পরে নাম পরিবর্তন করে দলটির নতুন নাম রাখা হয় ‘বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি’।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে এবার জীবনের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছেন এই গুণী শিল্পী। অবসরের ঘোষণা দিয়ে সোহেল রানা বলেন,
“১৯৭৩ সালে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম, এখন প্রায় ৫২ বছর পেরিয়ে গেছে। চলতে চলতে তো একসময় থেমে যেতে হয়। প্রফেশনাল অভিনয়ে আর দেখা যাবে না আমাকে। রাজনীতির ময়দান থেকেও সরে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, বয়স ও শারীরিক দুর্বলতা তাঁর অবসরের অন্যতম প্রধান কারণ। ৭৯ বছর বয়সী এই অভিনেতা বলেন,
“অভিনয় ও রাজনীতি—এই দুই জায়গায় থাকতে হলে অনেক পরিশ্রম, চিন্তাভাবনা আর পড়াশোনার দরকার হয়। এখন শরীর আর সে সাপোর্ট দেয় না। থাকা মানে এখন শুধু জোর করে থাকা।”
তবে তিনি জানিয়েছেন, এখনো একটি সিনেমা পরিচালনার ইচ্ছা আছে তাঁর, যদিও বয়সের কারণে সেটিও হয়তো আর সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন।
সোহেল রানাকে সর্বশেষ দেখা গেছে তানভীর হোসেনের পরিচালনায় ‘মধ্যবিত্ত’ সিনেমায়। যদিও গত এক দশকে সিনেমায় তিনি ছিলেন বেশ অনিয়মিত।
একজন মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা, নির্মাতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে সোহেল রানার দীর্ঘ কর্মময় জীবনের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছে চলচ্চিত্র অঙ্গন ও দর্শকরা।