
কেবল পোশাকের পরিবর্তন নয়, পুলিশের মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পর পুলিশ বাহিনী গভীর ইমেজ সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং পুলিশ কমিশন গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ বাহিনীর বাহ্যিক পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সবার পোশাক একই ধরনের করা হয়েছে, এবং মনোগ্রাম ও ক্যাপ থেকে নৌকা চিহ্ন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কেবল পোশাক পরিবর্তনেই যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি পুলিশের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পোশাকের পরিবর্তন হলে শুধুমাত্র অর্থের অপচয় হবে যদি বাহিনীর আচরণে উন্নতি না হয়। তারা মনে করিয়ে দেন যে, বর্তমানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত প্রায় একই ধরনের পোশাক পরিধান করে থাকেন।
পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান বলেন, ব্যাটালিয়ন পুলিশ, জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ—এগুলো তিনটি আলাদা আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। এগুলোকে একত্রিত করলে জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে। রাস্তায় পুলিশ দেখে মানুষ হয়তো মনে করবে যে তাকে ব্যাটালিয়ন পুলিশের সাহায্য প্রয়োজন, কিন্তু সে জানবে না এটা জেলা পুলিশ। এজন্য পুলিশের সব শাখার সদস্যদের একই পোশাকে রাখা বিভ্রান্তি বাড়াতে পারে।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের মানসিকতায় পরিবর্তন আনাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের প্রতি পুলিশের আচরণে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, “পোশাক পরিবর্তন করলে পুলিশের আচরণে উন্নতি হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই পুলিশিং ব্যবস্থায় আসল পরিবর্তন আনতে হলে তাদের প্রশিক্ষণ, আইনি প্রক্রিয়ার সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা এবং কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।”
বিদ্যমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বড় বাজেটের প্রকল্পের চেয়ে সেবামূলক পরিবর্তনে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।