
রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ১ হাজার শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ, ঝুঁকিতে ৪ লাখ রোহিঙ্গা শিশু
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে তহবিলের অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে, এবং এর ফলে একাধিক বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে আশ্রয়শিবিরগুলোতে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে, কিন্তু যদি এসব কেন্দ্র বন্ধ হয়, তাহলে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
গত জানুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএআইডি’র অনুদান বন্ধের ঘোষণা দেন, যার প্রভাব সরাসরি রোহিঙ্গা শিবিরে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোতে পড়েছে। ইতিমধ্যে ২০টিরও বেশি এনজিও তাদের কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং শিক্ষাকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আশ্রয়শিবিরগুলোতে প্রায় ১,৪০০টি শিক্ষাকেন্দ্র ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, যদিও সরকারের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবে তহবিল সংকটের কারণে শিবিরে শিক্ষার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেছেন, শিক্ষাকেন্দ্রগুলো চালু রাখতে এখনো আলোচনা চলছে, কিন্তু অন্যান্য প্রকল্পগুলোর জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এছাড়া, মাদক এবং সন্ত্রাসের ব্যাপারে উদ্বেগও রয়েছে, কারণ কম তহবিলের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে, এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে মাদকাসক্তি ও অপরাধ প্রবণতা বাড়তে পারে।
রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতি মাসে ৯৫টি শিশু জন্ম নেয় এবং গত আট বছরে ২ লাখ ৪০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে, যার মধ্যে অনেকের পুষ্টি ও শিক্ষা এখন বড় ঝুঁকিতে।
হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরামের সভাপতি আবদুস শুক্কুর বলেন, খাদ্য সহায়তা কাটছাঁট হলে, প্রতি রোহিঙ্গার জন্য বরাদ্দ থাকা ২৬ টাকা দিয়ে তাদের পেট ভরা সম্ভব নয়। এর ফলে শিশু-কিশোররা আরও বেশি ক্ষুধা, অপুষ্টি, এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে।