জীবজগতে সম্মানিত ১০ প্রাণী, যারা পাবে জান্নাতের পুরস্কার!

জীবজগতে সম্মানিত ১০ প্রাণী, যারা পাবে জান্নাতের পুরস্কার!

ইসলামী বিশ্বাসে জান্নাত এমন একটি স্থান, যা মূলত পরকালে ঈমানদার ও সৎকর্মশীল মানুষদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে ইতিহাস, হাদীস ও ব্যাখ্যাগ্রন্থগুলোতে কিছু ব্যতিক্রমী প্রাণীর কথা উঠে এসেছে, যারা মানুষ না হয়েও জান্নাতে প্রবেশের মর্যাদা পাবে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এসব প্রাণীর বিশেষ ভূমিকা, আল্লাহর আদেশ পালন কিংবা নবীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যতিক্রমী ঘটনাগুলোর কারণে তারা এই পুরস্কারের উপযুক্ত বলে বিবেচিত।

চলুন জেনে নিই সেই ১০টি প্রাণীর নাম, যাদের নিয়ে ইসলামি ঐতিহ্যে জান্নাতে যাওয়ার আলোচনা উঠে এসেছে:

১. হযরত সালেহ (আঃ)-এর উটনী

আদ জাতির জন্য আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রেরিত এই উটনিকে হত্যা করার পর তাদের উপর আযাব নেমে আসে। উটনিটি ছিল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি অলৌকিক সৃষ্টি।

২. হযরত ইসমাইল (আঃ)-এর দুম্বা

কুরবানির জন্য প্রস্তুত ইসমাইল (আঃ)-এর পরিবর্তে জান্নাত থেকে পাঠানো হয়েছিল এই দুম্বাটিকে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে কুরবানি হিসেবে আগত ছিল।

৩. হযরত মুসা (আঃ)-এর গাভী

একটি খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য আল্লাহর নির্দেশে এই গাভী জবেহ করা হয়। এই ঘটনাই সূরা বাকারা নামকরণের অন্যতম পটভূমি।

৪. হযরত ইউনুস (আঃ)-এর মাছ

তিনি যখন নিজ জাতিকে ছেড়ে চলে যান, তখন একটি বিশাল মাছ আল্লাহর নির্দেশে তাকে গিলে ফেলে এবং নিরাপদে তীরে পৌঁছে দেয়।

৫. হযরত ইবরাহিম (আঃ)-এর বাছুর

আতিথেয়তার নিদর্শনস্বরূপ ফেরেশতাদের সামনে যে বাছুর রান্না করে পরিবেশন করেছিলেন, তার প্রতি সম্মান দেখানো হয়।

৬. হযরত উযাইর (আঃ)-এর গাধা

যিনি একশ বছর ঘুমিয়ে ছিলেন, তাঁর সঙ্গে তাঁর গাধাও পুনরুত্থিত হয়। এটি আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন হিসেবে স্থান পায়।

৭. হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর পিঁপড়া

এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি একটি গোত্রকে সতর্ক করে বলেছিল, “হে পিঁপড়ারা! নিজেদের গর্তে ঢুকে পড়ো যাতে সুলাইমান ও তার বাহিনী তোমাদের অজান্তে পদদলিত না করে।”

৮. হুদহুদ পাখি (সুলাইমান আঃ-এর বাহক)

রানী বিলকিস সম্পর্কে সংবাদ এনে সুলাইমান (আঃ)-কে জানায়। তার বুদ্ধিমত্তা ও আনুগত্য ইসলামী ইতিহাসে স্মরণীয়।

৯. আসহাবে কাহফ-এর কুকুর

গুহায় ঈমানদার যুবকদের পাহারাদার হিসেবে থাকা এই কুকুরের নাম ‘কিতমীর’—যাকে জান্নাতের পশুদের মধ্যে গণ্য করা হয়।

১০. রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর বোরাক

মেরাজের রাতে এই বাহনে করে নবী (সঃ) মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং সেখান থেকে সাত আসমান ভ্রমণ করেন। বোরাক ছিল অত্যন্ত দ্রুতগামী ও আকাশযাত্রার উপযোগী বিশেষ বাহন।


এই প্রাণীগুলোর জান্নাতে যাওয়ার ব্যাখ্যা প্রধানত ইসলামী ব্যাখ্যান ও হাদীসগ্রন্থের নির্দিষ্ট অংশের আলোকে বলা হয়। অনেকগুলোর বিস্তারিত কুরআনে নেই, তবে ইসলামী ঐতিহ্য ও আলেমদের মতামত অনুযায়ী এই প্রাণীগুলো আলাদা মর্যাদাপূর্ণ।

ইসলাম শুধু মানুষের নয়, পশুপাখি ও জীবজগত সম্পর্কেও সুবিচার, দয়া ও শিক্ষা দেয়। এই দশটি প্রাণী তারই একটি নিদর্শন।

CATEGORIES
TAGS
Share This